কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক এবং হাঁস পালন পদ্ধতি ২০২৫
কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক
বর্তমান দেশের প্রেক্ষাপটে চাকরির বাজারে অনেক খারাপ সেটা সবাই জানেন। আর তাই আমাদের ভালো উদ্যোক্তা হওয়ার একটি প্লাটফরম হাঁস পালন। আপনি সর্বাধিক লাভজনক হবেন কোন জাতের হাঁস পালন করলে সেটা জানতে হলে আপনাকে মাংস ও ডিমের জন্য কোন জাতের হাঁস পালন করা উচিত তা সম্পর্কে।
- খাকি ক্যাম্বেল:ডিমের জন্য খাকি ক্যাম্বেল হাঁস পালন করতে হবে। খামারে পালন এর জন্য খাকি ক্যাম্বেল খামারিদের কাছে সব থেকে জনপ্রিয়। মাঝারি আকারের খাকি ১.৫ থেকে ২.২ কেজি হয়ে থাকে। এরা বছরে প্রায় ২৮০ থেকে ৩০০ টি ডিম দেয়।
- দেশি হাঁস: দেশি হাঁস সম্পর্কে আমরা অনেকেই কম বেশি জানি দেশি হাঁস তুলনামূলক দেরিতে ডিম দেয়। দেশি হাঁসের বয়স ৫-৬ মাস হলে এরা ডিম দেওয়া শুরু করে। দেশি হাঁস ৮০-৯০ টি ডিম দেয়।
- ইন্ডিয়ান রানার: এই জাতের হাঁসগুলো পালন এর জন্য যথেষ্ট উপযোগী। রানার জাতের হাঁসগুলো খানি ক্যাম্বল হাঁসের তুলনায় কম ডিম দেয়। তবে এরা ২০০ থেকে ২২০ টা দিম দেয় বছরে।
- বেইজিং বা পিকিন: এই জাতের হাঁস সাধারণত দেশি হাঁসের তুলনায় কম ডিম দেয়। এরা ৩-৪ মাসের মধ্যেই ডিম দেয়। বেইজিং জাতের হাঁস মাংসের জন্য বিখ্যাত।
- রাজহাঁস : রাজহাঁস অন্যান্য হাঁসের তুলনায় অধিক বড়। রাজহাঁস ২২-২৭ টি ডিম দেয় বছরে।১৪০ থেকে ১৫০ গ্রাম ওজন বিশিষ্ট হয়।
- বেইজিং : বেইজিং জাতের হাঁস খামারিদের কাছে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় মাংসের জন্য। কারণ এই হাঁসের মাংস অন্য যেকোনো হাঁসের তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং এই হাঁসের বুকের মাংস অনেক বেশি থাকে। এছাড়া এদের মাংস অনেক বেশি সুস্বাদু হওয়াই এটা অতি দ্রুত মাংসের জন্য জনপ্রিয়।
কোন জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয়
ডিম উৎপাদনের জন্য সবথেকে ভালো জাত হল ইন্ডিয়ান রানার ও রুয়েল ক্যাগুয়া হাঁসের সংমিশ্রণের মাধ্যমে তৈরি করা খাকি ক্যাম্বেল জাতীয় হাঁস। যা আমাদের দেশে বেশ জনপ্রিয় একটি হাঁস।
খাকি ক্যাম্বেল জাতীয় হাঁস শুধু ডিম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত তা নয় এরা মাংস উৎপাদনের জন্য বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া ডিম উৎপাদনের জন্য হাঁসের আরও কিছু জাত রয়েছে যেগুলো হলো ইন্ডিয়ান রানার এবং জিনডিং জাতের হাঁস।
মাংসের জন্য হাঁস পালন
মাংস উৎপাদনের জন্য বেইজিং জাত আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বেইজিং ছাড়াও পেকিন বা বেলজিয়াম হাঁস নামেও এ জাতটি বেশ পরিচিত। সঠিকভাবে তিম মাস পর্যন্ত পরিচর্যা করলে এই হাঁস তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি পর্যন্ত ওজন হয়ে থাকে।
এছাড়া মাংস উৎপাদনের জন্য রুয়েল ক্যাগুয়া, আইলেসবাড়ি,সুইডেন এবং মাসকভি জাতের হাঁস বেশ জনপ্রিয়। আর এই জাতের হাঁস গুলোর ওজন ৬ কেজি এবং মাদি হাঁসের ওজন ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
জিনডিং হাস পালন
জিনডিং হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা কারণ একটি জিনডিং হাঁস বছরে ৩০০ অধিক ডিম দিয়ে থাকে। জিনডিং জাতের হাঁস ডিম উৎপাদনের জন্য উপমহাদেশের প্রায় সকল দেশেই পালন করা হয়। জিনডিং হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি তাই সহজেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি তাই সহজেই এরা রোগাক্রান্ত হয় না।
হাঁস পালনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি
বর্তমানে হাঁস পালনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো বিল বা হাওড়ে হাঁস পালন। এখন অনেকেই বিল যেখানে জলাশয় থাকে তার পাশে একটি ঘর করে বা পিরপল টাঙ্গিয়ে যেন বৃষ্টির পানি এবং অন্য কোন পশু হাঁসের আক্রমণ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা রেখে পালন করছে। এই পদ্ধতিতে হাস পালন করলে অধিক লাভবান হওয়া যায়।
কারণ বিল বা হাওরে হাঁস পালন করলে তাদের খাবার কম লাগে এবং তার বিলে হাওড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টিক বা প্রোটিন জাতীয় খাবার থাকে এবং তাদের শরীরিক বৃদ্ধির জন্য অনেক বড় জায়গা পেয়ে থাকে। এর ফলে হাঁস এর দ্রুত বৃদ্ধি এবং দ্রুত ডিম দেওয়া শুরু করে। আর এর ফলে কম মুলধনে অধিক লাভবান হওয়া যায়।
মাংস ও ডিম উভয়ের জন্য কোন জাতের হাঁস লাভজনক
প্রাচীন ও জনপ্রিয় হাঁসের একটি জাতের নাম হল বেইজিং। এই জাতের হাঁসগুলো যেমন অনেক গুলো ডিম দেয় প্রতি বছরে তেমনি এদের তেমনি এদের হাঁস ১৪০ থেকে ১৭০ টি ডিম দেয় কিন্তু এরা লাগাদার ডিম না দিলে এই হাঁসগুলো ৩-৪ মাসের মধ্যেই ডিম দেয় এবং বেইজিং জাতের হাঁসগুলো ২-৩ বছর ডিম দেয়।
ডিম নেওয়া শেষ হলে এগুলো মাংস হিসেবে বিক্রি হয়। ২ বছর পরে হাঁসগুলো ওজন প্রায় ২.৪-৫.২ কেজি হয়।যা দেশি হাঁসের তুলনায় বেশ
ডি। আর এই জাতের হাঁস সাধারণত চার থেকে পাঁচ মাস বয়স হলেই ডিম দেওয়া শুরু করে। খানি ক্যাম্বল হাঁস বছরে ২৫০ থেকে ২৮০ টি ডিম পাড়ে। এ জাতের হাঁস একটানা দুই বছর ভালো মতো ডিম পাড়ে।
বেইজিং হাঁস কত দিনে ডিম দেয়
বেইজিং বা পেকিন হাঁস সাধারণত ৫-৬ মাস বয়স হলে ডিম দেওয়া শুরু করে। আর এই বেইজিং বা পেকিন হাঁস বছরে প্রায় ২৩০-২৫০ টি ডিম পাড়তে পারে।
দেশি হাঁস কত দিনে ডিম দেয়
দেশিরা সাধারণত অন্যান্য হাঁসের তুলনায় অনেকটা দেরিতে ডিম দেয় শুরু করে। দেশি হাঁস ৫-৬ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে। আর এই হাস বছরে ১৫০ থেকে ২০০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।
চিনা হাঁস কত দিনে ডিম দেয়
সাধারণত চিনা হাঁস ৬ থেকে ৭ মাস বয়স হলে ডিম দেওয়া শুরু করে এবং এই হাঁস বছরে প্রায় ৭০-১২০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। এ জাতের হাঁস অনেক বছর পর্যন্ত ডিম দিতে থাকে।
রাজহাঁস কত দিনে ডিম দেয়
কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আজকের এই পোস্টে। বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্টটি পড়ুন। নিচে আমরা রাজহাঁস কত দিনে ডিম দেয় তা নিয়ে আলোচনা করব।
রাজহাঁস সাধারণত ৮-৯ মাস বয়সে ডিম দেওয়া শুরু করে থাকে।ডিম দেয়। এরা বছরে ১ থেকে ২ বার ডিম দেয়। আর একবার ডিম দিলে একসাথে ৮ থেকে ১২ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। তবে এজাতের হাঁস শুধুমাত্র শীতকালে ডিম দিয়ে থাকে।
লেখকের মন্তব্য
কোন জাতের হাঁস পালন লাভজনক তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে আজকের এই পোস্টে। বিস্তারিত জানতে সম্পন্ন পোস্টটি পড়ুন। শীতকালে হাঁসের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে হাঁস পালন করলে কম সময়ে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url