পাঙ্গাস মাছের ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা

পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে সুন্দর করে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে। 

পাঙ্গাস মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যার ফলে শরীরের পুষ্টি ও হাড় মজবুত হয়। নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায়গুলো জানা না থাকলে আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে সকল বিষয় জানতে পারবেন।  

সূচিপত্র 

ভূমিকা 

পাঙ্গাস মাছ আমাদের অনেক পুষ্টিকর একটি খাদ্য। পাঙ্গাস মাছ আমাদের শরীরের অনেক ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করায়। পাঙ্গাস মাছের মাংস আমাদের পেশী মজবুত ও হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। আপনি যদি পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন তাহলে সমস্ত কিছু বুঝতে ও জানতে পারবেন। 

পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা 

পাঙ্গাস মাছ অবশ্যই অনেক উপকারীতা রয়েছে যা মানুষের জন্য ভালো। বিশেষ করে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং শরীরে পুষ্টি জোগানোর ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ। পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে 

কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে : কিছু মানুষের যদি কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে। তবে চিন্তার কারণ নেই, পাঙ্গাশ মাছ হলো এমন একটি মাছ যাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে। যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে তারা এই পাঙ্গাস মাছ খেতে পারে। 

পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা মধ্যে এটি হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যাদের উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল রোগ আছে তারা সবসময় পাঙ্গাশ মাছ খেতে পারে। 

হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে : এটি এক ধরনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা প্রতিরোধ করা যায় তা হলো দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা প্রতিরোধ করা যায় তা হলো করোনারি হৃদরোগ। কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতোই একটি রোগ, পাঙ্গাস মাছে থাকার অসস্পৃক্ত চর্বি শরীর থেকে করোনারি হৃদরোগ রোধ করতে সহায়তা করে থাকে। 

পেশি গঠনে সহায়তা করে : যারা পেশী বাড়াতে ও শক্তিশালী করার জন্য ডায়েট চার্ট করতে চায়, তাদের জন্য পাঙ্গাশ মাছের মাংস ভীষণ ভালো। পাঙ্গাস মাছের মাংসের উচ্চ প্রোটিন উপাদানের জন্য মাংস ভীষণ কার্যকরী পেশি গঠনের জন্য। 

  • পেশির ভর বাড়াতে সাহায্য করে 
  • পেশি শক্তিশালি করতে সহায়তা করে 
  • পেশী শক্ত করতে সহায়তা করে
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। 
  • শরীরের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে 
পাঙ্গাস মাছের পুষ্টি উপাদান : পাঙ্গাস মাছের পুষ্টি উপাদান অনেক বেশি। পাঙ্গাশ মাছে খুব বেশি প্রোটিন এবং অসম্পৃক্ত চর্বি রয়েছে। এই উভয় ধরনের পর্দাথ শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ প্রয়োজনীয়। 

রক্তনালীর চর্বি জমাট বাধা রোধ করে : পেশী বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং কার্ডিওভাসকুলার ও করোনারি হার্টের মতো অনেক রোগের সংঘটন প্রতিরোধ করে থাকে। 

মাতৃগর্ভে শিশুর বৃদ্ধি অপ্টিমাইজ করতে সহায়তা করে : গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পাঙ্গাশ মাছ গর্ভাবস্থায় বৃদ্ধির জন্য উপকারী একটি মাছ। এটি ডিএইচএ এর বিষয়বস্তু এবং পাঙ্গাস মাছে সমৃদ্ধ ওমেগা ৩ এর সুবিধার কারণে হয়ে থাকে। পাঙ্গাশ মাছ শিশু গর্ভে থাকাকালীন স্বাস্থ্য গঠনে সাহায্য করে। 

পাঙ্গাস মাছের তেল চর্বি কি ক্ষতিকর 

পাঙ্গাস মাছ খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না। পাঙ্গাস মাছের তেল বা চর্বি এইটা কোন ক্ষতিকর জিনিস নয়। কিছু কিছু সাধারণ মানুষ এগুলো ভূল ধারণা ছড়াই হয়তো তাদের এইটা মনের কথা। কোন পবেষণায় পাওয়া যায়নি পাঙ্গাস মাছের তেল চর্বি ক্ষতিকর। আসলে কিছু সাধারণ মানুষ এগুলো নিয়ে বেশি কথা বলে। পাঙ্গাস মাছ শরীরে অনেক পুষ্টি জোগায়। 

আপনি যদি পাঙ্গাস মাছ খেতে বেশি পছন্দ করেন। আপনার পছন্দের মাছের তালিকায় যদি পাঙ্গাস মাছ থেকে থাকে। আর যদি আপনি এই পাঙ্গাস মাছ সম্পর্কে জেনে না থাকেন তাহলে আপনার ধারণাটি একেবারেই ভুল। কারণ পাঙ্গাস মাছ খেলে কোন ধরনের ক্ষতি হয় না পাঙ্গাস মাছের অনেক পুষ্টি রয়েছে। 

পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারীতা 

পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে জানানো আছে আমার এই পোস্টে। পাঙ্গাস একটি বিশেষ পুষ্টি সম্পন্ন মাছ। পাঙ্গাস মাছে রয়েছে অনেক পুষ্টি এই মাছ আমাদের শরীরে পুষ্টি যোগায়। এই মাছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি থাকে যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের চাহিদা পূরণ করে। পাঙ্গাস মাছে রয়েছে অ্যামিনো এসিড যা শরীরের বিভিন্ন রকম কার্য সম্পাদন করতে সাহায্য করে। 

এই পাঙ্গাস মাছ খাওয়ার ফলে মানুষের শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণ হয়। এই মাছ মানুষের খাবার উপযোগী ও পুষ্টিকর মাছ। এই মাছে রয়েছে চর্বি ও তেল যা অনেক মানুষের প্রিয় খাবার। বর্তমানে বাংলাদেশে মানুষের শরীর স্বাস্থ্যবান করার জন্য খাবারের তালিকায় পাঙ্গাস মাছ রেখেছেন। পাঙ্গাস মাছ পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার। 

নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় 

নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় হলো নদীর পাঙ্গাস মাছের পেট চ্যাপ্টা হয়ে থাকে তাদের মাথা থেকে পেট পর্যন্ত লম্বা সরু হয়ে থাকে। তার ফলে পুকুরের পাঙ্গাস মাছ থেকে সমুদ্র পাঙ্গাস অনেক আলাদা হয়ে থাকে। পুকুরের মাছ খুব একটা সুস্বাদু হয় না। 

আবার নদীর পাঙ্গাস মাছ খেতে অনেক সুস্বাদু হয় অনেক বেশি পুষ্টি ও পাওয়া যায় নদীর পাঙ্গাস মাছ থেকে। নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় হলো নদীর পাঙ্গাস মাছ পুকুরের পাঙ্গাস মাছের থাকে সম্পন্ন আলাদা। আর আপনি পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের অংশটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

একজন পাঙ্গাস মাছ চাষ করে এই রকম মানুষের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে পারেন। আর আপনি যদি পারেন তাহলে আপনার বাসার আসে পাশে যদি বাজার হয় তাহলে সেখানে যেয়ে নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় জানতে পারবেন। নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায় হলো নদীর পাঙ্গাস মাছের পেট চ্যাপ্টা হয়ে থাকে। 

পাঙ্গাস মাছে কি এলার্জি আছে 

পাঙ্গাস মাছ একটি হাঙ্গেরিয়ো জাতীয় ক্যাটফিস। এর মাঝে মূলত কাটা থাকে না তাহলে সকলে প্রিয়। কিন্তু পাঙ্গাস মাছ এর এলার্জি রয়েছে কারণ এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারেন। যার ফলে এটি সরাসরি ইমিউন সিস্টেম কে আক্রমণ করে। তাই বলা যায় পাঙ্গাস মাছের এলার্জি আছে। 

পাঙ্গাস মাছ খেলে কি ওজন বাড়ে 

সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, যে পেটে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমাতে মাছের তেল খুবই উপকারী। কারণ মাছের তেলের চর্বি থাকে সেটা অসম্প্রক্ত যার ফলে সেখানে কোন রকম টিস্যু এবং বানানি রঙের টিস্যু রয়েছে যা চর্বি সঞ্চয় করে কিন্তু মাছের চর্বি সেখানে সঞ্চয় হয় না। 

যার ফলে মাছের তেল খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বাড়ায় না। এমনকি পেটের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমাতে পাঙ্গাস মাছ খাওয়ার উপকারিত শরীরের সুস্থ রাখতে হলে পাঙ্গাস মাছ খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। পাশাপাশি পাঙ্গাস মাছ এলার্জির পরিমাণ কম ও ক্যালরি পরিমাণ খুব সীমিত।

পাঙ্গাস মাছের তেল খাওয়ার উপকারিতা 

স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনেকেই মাছের তেল খাওয়া থেকে দূরে থাকেন। একই কারণে মাছের চর্বিযুক্ত মাছ খেতে আপত্তি অনেকের। কিন্তু আমেরিকার এক বিশেষজ্ঞের মতে প্রত্যেক মানুষের উচিত তাদের খাদ্য তালিকায় সপ্তাহে অন্তত দুই দিন তেলযুক্ত মাছ ও তেল খাওয়া। 

কেননা তেলযুক্ত মাছ অনেক পুষ্টি উপাদান থাকে। আর মাংসের চর্বির মতো মাছের চর্বি ক্ষতিকারক নয়। মাছের চর্বিতে থাকে ওমেগা, টিন, ফ্যাটি এসিডের চমৎকার উৎস। যেটা চর্বির ক্ষতিকারক উপাদান যুক্ত। এটি আছে ভিটামিন D.H.A এটি রক্তনালির রক্ত জমাট বাধতে বাধা দেয়। নিমিষেই রক্ত সরবরাহ করে। 

রক্তের ক্ষতিকর চর্বিকে রক্তনালিতে জমতে বাধা সৃষ্টি করে। নিয়মিত তেল যুক্ত মাছ খেলে, হৃদরোগের আশঙ্কা এক তৃতীয় অংশ কমে আসে। ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ খুবই কার্যকর। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় প্রমাণিত শিশুদের বুদ্ধির বিকাশ, স্মৃতিশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ভূমিকা পালন করে। 

পাঙ্গাস মাছের অপকারীতা

পাঙ্গাস মাছ ভালো রাখার জন্য প্রিজারভেটিভ ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রচুর পরিমাণ ব্যবহার করা হয়  এতে করে সাধারণ মানুষ বাজার থেকে নিয়ে এসে রান্না করে খেলে অসুস্থ হতে পারে। মাছ ভাজা রাখার জন্য সেগুলোতে মেডিসিন দিয়ে রাখা হয়। 

আর সেইগুলো মাছ খেলে অনেক বেশি দেহের জন্য ক্ষতিকর হয়। তাই আমরা বাজার থেকে মাছ কিনলে সেটা ভাজা বা জীবিত মাছ কিনব। পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারীতা আশা করি বুঝতে পেরেছেন। 
যেসব মা নিয়মিত মাছ খান তাদের বুকের দুধের মধ্যে D.H.A পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে পারে। ফলে ৯ থেকে ১০ বছর শিশুরা পর্যাপ্ত ওমেগা তিন এবং D.H.A গ্রহণ করলে, পরবর্তী জীবনে শিশুদের বুদ্ধি বিকাশ স্মৃতি শক্তি ও মেধার বিকাশ হয়ে থাকে। এই হল পাঙ্গাস মাছের তেল বা চর্বির উপকারীতা। 

পাঙ্গাস মাছের পুষ্টিগুণ

পাঙ্গাস একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মাছ। এই মাছে ক্যালরি এবং প্রোটিন বেশি। ১০০ গ্রাম পাঙ্গাস মাছের পুষ্টিগুণ তুলে ধরা হলো : 
  • ১০৫ ক্যালোরি 
  • ২.৯ গ্রাম চর্বি
  • ১৮ গ্রাম প্রোটিন
  • ৫০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম 
  • ৮০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল 
  • ১.৫ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট 
পাঙ্গাস মাছ শুধু মাত্র প্রোটিন সমৃদ্ধ নয়, এটি প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানে পরিপূর্ণ। পাঙ্গাশ মাছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ওমেগা ৩ ফ্য্টি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি ১২ এবং সেলেনিয়াম রয়েছে। 

গর্ভাবস্থায় পাঙ্গাস মাছ খাওয়া যাবে কি

পাঙ্গাস মাছ প্রায় সর্বদা কারখানায় চাষ করা হয়, যার ফলে পাঙ্গাশ মাছ বিষ হয়ে যায়। এছাড়া ফার্সে পাঙ্গাশ মাছের স্বাদ বাড়ানো জন্য রাসায়নিক সার ও বিষাক্ত কীটনাশক দেওয়া হয় যা খেলে উপকারের থেকে অপকার বেশি হতে পারে, বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পাঙ্গাশ মাছ না খাওয়া ভালো। 

লেখকের মন্তব্য 

আজকের আর্টিকেলে আমরা জেনেছি যে পাঙ্গাস মাছের উপকারিতা ও অপকারীতা সম্পর্কে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য পাঙ্গাশ মাছ খাওয়া এবং পাঙ্গাস মাছের তেল খাওয়ার উপকারিতা,নদীর পাঙ্গাস মাছ চেনার উপায়  সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

আমাদের আলোচনা ছাড়া কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আমাদের সঠিক উত্তর দেওয়া চেষ্টা করব। 







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url