চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার ও চুলের যত্নে নিমপাতার ব্যবহার ২০টি
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। অনেক মানুষের চুলকানি হয়ে থাকে কিন্তু কীভাবে নিম পাতা দিয়ে চুলকানি ঠিক করবেন সেটা সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। সেজন্য আজকে আমি এই আর্টিকেলে সঠিকভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
নিম পাতার ফেস প্যাক, নিম পাতা বেটে মুখে দিলে কি হয়, নিম পাতা ফর্সা হওয়ার উপায়, চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার, নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম এই সব বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়ে যাব।
সূচিপত্র
চুলকানি জাতীয় সমস্যায় নিমপাতার ব্যবহার
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার বিষয়ে আমরা অনেকেই অবগত। চুলকানির জন্য অনেকেই চিকিৎসা আগ্রহী হন। অনেকে ডাক্তারের কাছে যান৷ আবার অনেকে ভেষজ চিকিৎসা করে থাকেন। ভেষজ চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিম পাতা খুবই কার্যকারি। নিম পাতার ওষুধি গুণাবলি এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে
চোখের চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার :চোখের চুলকানিতে যদি নিম পাতার দশমিক চিন্তা করে ওই পানি নরমাল করে পানিটার ঝাপটা যদি চোখে নেওয়া যায় তাহলে চুলকানি সেরে যাবে।
শরীরের রেশ হলে নিম পাতার ব্যবহার :শরীরের রেশ হলে প্রচুর জ্বালাপোড়া হয়। এ সময় যদি পুরো শরীরে নিম পাতাবাটা মেখে রাখা যায় তাহলে অবশ্যই কার্যকরী ফল পাওয়া যাবে।
খোস পচরা ও ঘা সারাতে নিমপাতার ব্যবহার :নিম পাতা ও হলুদ বেটে চুলকানির জায়গায় লাগিয়ে পরে ধুয়ে ফেললে চুলকানি সেরে যায়।
দাদ হলে নিম পাতার পানি সিদ্ধ করে পরবর্তীতে আক্রন্ত জায়গায় পানি ব্যবহার করলে কিছুদিন পর রোগ সেরে যাবে।
চুলে নিম পাতার ব্যবহার
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার এর জন্য নিম পাতার বিভিন্ন ধরনের ওষুধি গুণাবলি রয়েছে। নিচে চুলের উপকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে
চুলের গোরা মজবুত এর জন্য নিমপাতা :স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য চুল সুন্দর হওয়া জরুরি। সুন্দর চুল পেতে বিভিন্ন ভেষজ গুনগুন সম্পন্ন পাতা ব্যবহার হয়ে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখ্য হচ্ছে নিম পাতা। প্রতি সপ্তাহে নিম পাতা ভালো করে বেটে একবার যদি ব্যবহার করা হয় তাহলে চুল মজবুত হবে। চুল পড়া কমে যাবে।
মধু এবং নিমের রস একসাথে মিশিয়ে সপ্তাহে তিন দিন যদি লাগানো যায়। তবে ঝলমলে চুল পাওয়া যাবে।আমলকির রস নিন পাতার রস দই ও লেবুর রস ১ চামচ করে মিশিয়ে চুলে লাগালে, চুল ভালো থাকবে।
উকুন থেকে বাঁচতে নিম পাতা :উকুনের সমস্যা সমাধানের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অতুলনীয়। নিমপাতা বেটে মাথার তালুতে ব্যবহার করে পরবর্তীতে ধুয়ে ফেললে উকুন দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে চিরুনি দিয়ে আচড়ালে উকুন মারন সহজ হবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এভাবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে।
খুশকির সমাধান :খুশকির জন্য নিমের ব্যবহার খুবই কার্যকরী। নিমের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নাশক উপাদান রয়েছে। তাই জন্য নিম এর ব্যবহার খুবই কার্যকর। এটি মাথার তালুকে পরিষ্কার এবং চুলকানি মুক্ত রাখে।
চার কাপ পানিতে একমুঠো নিমপাতা নিয়ে গরম করলে ওই পানি পরবর্তীতে শ্যাম্পু করার পর চুলে ব্যবহার করলে চুল ভালো থাকবে খুকশি মুক্ত হবে৷
নিম পাতার ঔষধি গুণ
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার ছাড়াও আরো কিছু কার্যকরী ব্যবহার রয়েছে। নিচে এসব বিষয় আলোচনা করা হলো -
- রোগ প্রতিরোধের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নিমে প্রচুর এন্টি অক্সিজেন থাকে। প্রতিদিন নিম পাতা গুড়ো করে পানির সাথে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- নিমের ফুল ওজন কমাতে সক্ষম। এটি শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলাতে এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এক মুঠো নিমের ফুলের গুড়ার সাথে ১ চামচ মধু ও হাফ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খেলে ওজন কমে।
- প্রাচীনকালে কোন ধরনের ভাইরাসের প্রতিষেধকের জন্য নিমের পাতা ব্যবহার করা হতো। আধুনিক যুগে চিকেন পক্সের জন্য সমাধান এটি।
- নিম পাতার পানি সেদ্ধ করে স্প্রে বোতলে রাখলে প্রতিদিন ঘরে স্প্রে করলে মশা কমে যাবে।
- পোকামাকড়ের কামড় এর জালা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আম গাছের পাতা বা ছাল বেটে লাগালে ব্যথা কমে যায়।
- ডায়বেটিস কমাতে নিম খুবই ভালোভাবে কাজ করে।
নিম পাতা চুলে দেওয়ার নিয়ম
- প্রথমে আপনি পরিমাণ মতো নিম পাতা নিন।
- এরপর সেই নিম পাতা পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
- এরপর ধুয়ে পরিষ্কার করা নিম পাতা পানিতে ভিজিয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট তৈরি করতে হবে।
- আপনার মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ায় নিম পাতার পেস্ট ভালো করে লাগিয়ে নিন।
- এটি ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত পেস্টটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন।
- এরপর শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ও মাথা পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সকালে খালি পেটে নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারীতা
- নিম পাতা আমাদের শরীরে বিশেষ কিছু সমস্যা থেকে রক্ষা করে যেমন চোখের রোগ, পেটে সমস্যা, ডায়বেটিস, লিভার ইত্যাদি।
- নিম পাতার রস কিংবা নিম পাতা খাওয়ার ফলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- নিম পাতা শরীরের রক্তকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
- নিম পাতা খাওয়ার ফলে পেটে কৃমি সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- নিম পাতা ত্বকে ব্যবহারের ফলে ত্বকের আলসার, ব্রাণ, মেলাসমা সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- নিম পাতার রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যা একজন ডায়াবেটিস রোগির জন্য অত্যন্ত উপকার।
- নিম পাতা খাওয়ার ফলে মাড়ি কিংবা দাঁতের ক্ষত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- নিম পাতার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা পেটের সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
- ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিম পাতা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- নিম পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মূত্র নালীর বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
- গর্ভাবস্থায় যদি গর্ভবতী মহিলাদের নিম পাতার রস খায় তাহলে গর্ভপাতের সম্ভবনা বেড়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় নিম পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- দীর্ঘদিন খালি পেটে নিম পাতা খাওয়ার ফলে শরীর অতিরিক্ত শুকিয়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হতে পারে।
- মাথাব্যথা বা ডায়েরিয়ার সমস্যা থাকলে নিমপাতার রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- অতিরিক্ত নিম পাতা খাওয়ার ফলে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
নিম পাতার বড়ি খাওয়ার উপকারিতা
- নিয়মিত নিম পাতার বড়ি খাওয়ার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
- নিম পাতার বড়ি খেলে হজম শক্তি উন্নত হয়।
- নিম পাতার বড়ি খাওয়ার ফলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয় এবং অনেক সময় কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে।
- বিশেষ করে নিম পাতার বড়ি খেলে পেটের কৃমির সমস্যা দূর হবে।
- নিম পাতার বড়ি খাওয়ার ফলে মূত নালীর সংক্রান্ত সমস্যা দূর হবে।
- নিম পাতার রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান যা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যা একজন ডায়াবেটিস রোগির জন্য অত্যন্ত উপকার।
- নিম পাতার বড়ি খাওয়ার ফলে মাড়ি কিংবা দাঁতের ক্ষত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- নিম পাতার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা পেটের সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
- ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিম পাতার বড়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- নিম পাতার বড়ি খাওয়ার ফলে এটি শরীরে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে ফলে বিভিন্ন ঘা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
- পেটের আলসার থেকে রক্ষা করতে নিমপাতার বড়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- দাদের সমস্যা থেকে রক্ষা করতে নিমপাতার বড়ি গুরুত্ব অপরিসীম।
এলার্জির ক্ষেত্রে নিম পাতার উপকারিতা
- নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদ একসঙ্গে মিশিয়ে আপনার ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের ব্রণ এবং ত্বকের তেলাক্ত ভাব দূর হবে। এছাড়া আপনি নিমপাতা জলের সাথে সিদ্ধ করে সে জল মুখে ভালোভাবে ধোয়ার ফলে ত্বকের ব্রণ ভালো হয়।
- নিমপাতার সঙ্গে চন্দন ও পোলাপজল এবং তুলসীপাতা একসঙ্গে মিশিয়ে সেগুলো ভালোভাবে পেস্ট করে, সেই পেস্ট ব্রণের উপর লাগালে মুখের ব্রণ ও ব্রণের দাগ অতি নিমিষেই দূর হয়।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url