গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা পাওয়া যায় সেই বিষয় নিয়ে আজকের আর্টিকেল। বাতাবিলেবু ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সবাই খেতে পছন্দ করে। এই লেবুতে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা আমাদের অজানা।
তাই আজকে আমরা জানবো বাতাবি লেবুর কি কি পুষ্টিগুণ এবং গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা কতটুকু রয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে। তাই চলুন জেনে নিই বাতাবি লেবুর সকল গুণাগুণ সম্পর্কে।
সূচিপত্র
ভূমিকা
বাতাবি লেবু পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল।গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা ,বাতাবি লেবুতে অনেক পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে। যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির অভাব পূরণ করে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। বাতাবি লেবুতে পটাশিয়াম, ফাইবার এমনকি ভিটামিন সি ইত্যাদি রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। গর্ভবতী নারীদের বাতাবি লেবু খেলে, অনেক উপকার মিলে। গরমকালে বাতাবি লেবুর পাশাপাশি লেবু পানি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
বাতাবি লেবু শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম এই বাতাবি লেবু। বাতাবি লেবু বিভিন্ন রোগের এন্টিবায়োটিক এর কাজ করে থাকে। এছাড়াও লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে। আমরা বাতাবি লেবুর পুষ্টিগুণ এবং লেবু পানির উপকারীতা সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নের আলোচনা জানতে পারবেন।
গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা
সাধারণতভাবে, বাতাবি লেবু খেলে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই জানি না, গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা আছে কিনা। কিন্তু গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। বাতাবি লেবুত বিটা ক্যারোটিন এবং ফলিক এসিড থাকে। যা গর্ভাবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। লেবুতে থাকা বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। লেবুতে থাকা বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ গর্ভবতী মায়ের এবং শিশুর জন্য অত্যন্ত উপকারী। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বাতাবি লেবু অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। উপরোক্ত উপকারিতাগুলো ছাড়াও আরো কিছু উপকারিতা রয়েছে যা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অবদান রাখে।
বাতাবি লেবুর উপকারিতা ও অপকারীতা
আমরা জানি গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা ,বাতাবি লেবু অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে বা এর উপকারীতা কি। কিন্তু উপকারীতার পাশাপাশি এর কিছু অপকারীতা ও রয়েছে। তাই আমরা এই পর্বে জানব গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারীতাগুলো কি কি রয়েছে সে সম্পর্কে।
উপকারীতা সমূহ নিম্নরুপ
শরীরের ওজন কমানোর জন্য বাতাবি লেবুর অবদান রয়েছে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বাতাবি লেবু সাহায্য করে।
বাতাবি লেবুর আরেকটি উপকারী দিক হচ্ছে হজমে সাহায্য করে থাকে।
মাড়িতে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়। এই রোগ উপশমে লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী।
হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতেও সাহায্য করে এই ফল।
ক্যান্সারের কোষগুলো ধ্বংস করতে এর ভূমিকা অনেক।
ত্বক অনেক সুন্দর হয়ে ওঠে।
দেহের ক্ষতস্থানগুলো ভালো হয়।
বনা থাকে।
অধিক পরিমান খেলে পেট ফাপার সমস্যা দেখা দেয়।
অধিক খেলে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে।
বেশি পরিমাণ খেলে গ্যাস হতে পারে।
লেবুর রস ত্বকে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এটিতে এসিডের পরিমাণ বেশি থাকে।
উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা কি কি এবং এর সাথে সাথে আরও জানতে পারলাম অধিক পরিমান বাতাবি লেবু খেলে কি কি অসুবিধা হতে পারে সে সম্পর্কে।
বাতাবি লেবু খাওয়ার নিয়ম
আমরা প্রায় সকলেই বাতাবি লেবু খেতে পছন্দ করি। গরমের সময় বাতাবিলেবুর চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। বাতাবি লেবু খাওয়ার মধ্যে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। অর্থাৎ বাতাবি লেবু কিভাবে খেলে বেশি স্বাদ লাগবে, সেটি আগে জানতে হবে। আমরা বাজার থেকে বাতাবি লেবু নিয়ে আসার পর বিভিন্নভাবে খেয়ে থাকি। কিন্তু আজকে এই আলোচনার পর আপনি এই নিয়ম অনুযায়ী খেলে অনেক মজা পাবেন।
লেবু প্রথমে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে ঝরিয়ে নিন। তারপর একটি পাত্রে ঝরানো ফুলগুলোর সাথে পরিমাণ মতো লবণ এবং সাথে কিছু চিনি দিয়ে দিন। এরপর পরিমাণ মতো মরিচের গুঁড়ো দিয়ে দিন এবং সবগুলো একসাথে মাখিয়ে নিতে হবে। তাহলে তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু বাতাবিলেবু। এভাবে বাতাবি লেবু খেলে আশা করি অনেক মজা পাবেন।
গর্ভাবস্থায় লেবুর রস খাওয়া যাবে কি না
গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সম্পন্ন আর্টিকেলটি পড়ুন।লেবুর রস পান করা অত্যন্ত উপকারী তবে যদি সেটা সীমিত পরিসরে হয়ে থাকে। অতিরিক্ত পরিসরে লেবুর রস খেতে গর্ভাবস্থায় শরীরের উপর ভিন্ন প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় লেবুর রস খাওয়ার সময় অবশ্যই অল্প পরিসরে করে খেতে হবে। তাই গর্ভাবস্থায় লেবুর রস খাওয়ার কিছু সাবধানতা তুলে ধরা হলো যা অবশ্যই একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেবুতে থাকা এসিড আপনার দাঁতের এনামেল এর উপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং দাঁতের যে কোন সমস্যার প্রতিরোধ করার জন্য লেবুর রস সেবন করার পরে অবশ্যই ভালোভাবে মুখ কুলি করে নিতে হবে। আপনি যদি গর্ব অবস্থায় এই লেবুর রস পান করা শুরু করতে চান তাহলে অবশ্যই একেবারেই বেশি পরিসরে খাওয়া শুরু করবেন না। আগে অল্প পরিসরে খেয়ে পরীক্ষা করে নিবেন।
যে লেবুর রস খাওয়ার পরেই আপনার গ্যাসের কোন সমস্যা বা বুক জ্বালাপোড়া হচ্ছে কিনা। যদি বুক জ্বালাপোড়া করে থাকে তাহলে লেবু খাওয়া আপনার জন্য নিরাপদ নয়। একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য একটি গোটা লেবু কখনোই খাওয়া উচিত না। কেননা একটি গোটালেবুর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণের রস থাকে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই একটি লেবুকে কয়েক টুকরো করে অল্প করে খাওয়া উত্তম।
অবশ্যই টাটকা লেবুর রস সেবন করবেন এবং রস পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন শুধুমাত্র লেবুর রস খেলে এসিডের সমস্যা হতে পারে। অবস্থা লেবুর রস খাওয়া উত্তম পদ্ধতি হলো পানি হালকা করে গরম করে নিয়ে এরপরে গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার সব থেকেই উত্তম।
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার অপকারীতা
গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা ,লেবুর রস খাওয়া যদিও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী। তবে এর কিছু পাশ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই লেবুর রস খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া শুরু করা উত্তম। কেননা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলাদের গ্যাসের সমস্যা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যায়। বুক জ্বালাপোড়া করার সম্ভাবনা ও রয়েছে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়।
লেবুর মধ্যে যেহেতু সাইট্রিক এসিড রয়েছে। তাই ঘর অবস্থায় অবস্থায় লেবু খাওয়ার কারণে এই এসিড বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই এই সময় গ্যাসের সমস্যা অতিরিক্ত দেখা দিলে লেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকা উত্তম। গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ গর্ভবতী মহিলাদের দাঁত এবং ঘাটতি দেখা দেয়। লেবুর মধ্যে থাকা উচ্চমাত্রায় হাইট্রিক এসিড এই ধরনের সমস্যাগুলোকে আরও বেশি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যার কারণে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং দাঁতের মধ্যে অন্যান্য আরও সমস্যা দেখা দিতে পারে। দাঁতের মধ্যে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অতিরিক্ত লেবুর রস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। গর্ভাবস্থায় শীতের সময় লেবুর রস খাওয়ার কারণে ঠান্ডা লেগে সর্দি কাশি হতে পারে। আর গর্ভবতী মায়ের ঠান্ডা লাগলে গর্ভস্থ সন্তানের ও ঠান্ডা লেগে যায়।
যার কারণে অনেক সময় দেখা যায় সন্তান জন্মের পরপরই নিমুনিয়া রোগী আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই শীতের সময় গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকা উত্তম। যদিও খেতে হয় তাহলে গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে হবে।
গর্ভবস্থায় প্রথম তিন মাসের সর্তকতা
গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা ,গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে গর্ভবতী মহিলাদের বিশেষ রোগ দেখা। যেমন- বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, শরীর খারাপ লাগা, ক্লান্তিবোধ হওয়া, স্তনের পরিবর্তন হওয়া, বুক জ্বালাপোড়া করা, কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এগুলো যদিও গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক একটি বিষয়। কিন্তু এই সময় গর্ব অবস্থায় ঝুঁকি পূর্ণ কিছু জিনিস রয়েছে।
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভপাত হওয়ার ৭৫ শতাংশ গর্ভপাত প্রথম তিন মাসেই হয়ে থাকে। তবে এই গর্ভপাত হওয়ার বিভিন্ন কারণ হতে পারে। যেমন - বাচ্চার গঠনগত ক্রটি, মায়ের ডায়াবেটিস, হরমোনের তারতম্য, ইনফেকশন ইত্যাদি। ভোন গঠনের মূল সময় হলো গর্ভের প্রথম তিন মাস। আর এই সময়ে গর্ভপাত হয়ে থাকে। তাই এই সময় অনেক সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ধুনপান থেকে বিরত থাকা, কোন ধরনের ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকা, বাড়ি কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকা, হাঁটাচলা কম করা, বিশেষ করে কিছু খাদ্য রয়েছে সেগুলো থেকে বিরত থাকা। যেমন - আনারস, পেঁপে, কামরাঙ্গা এবং কম সিদ্ধ করা খাবার থেকে বিরত থাকা। এই তিন মাস বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
গর্ভবতী মহিলাদের স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি ক্ষুধা পায় এবং সেই সময়ে ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করাটা আসলে তাদের জন্য খুব জরুরি। কেননা এই খাবার মায়ের সাথে সাথে শিশুর জন্যও অনেক বেশি দরকারী। আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই চান তার অনাগত সন্তানের গায়ের রং যেন উজ্জ্বল হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে খাদ্য নির্বাচনের উপর সন্তানের শরীরের বর্ণ কেমন হবে তা নির্ভর করে না, এটি নির্ভর করে তার বাবা - মা এর কাছ থেকে যে জিন পেয়েছে তার উপর। তবে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী গর্ভবতী অবস্থায় যে খাবারগুলো খেলে বাচ্চার বর্ণ ফর্সা হতে পারে তা হলো - দুধ, ডিম, জাফরান দুধ, চেরি ও বেরি জাতীয় ফল, টমেটো, কমলা, নারিকেল ইত্যাদি।
লেখকের মন্তব্য
আজকে আর্টিকেলে আমরা জানতে পারলাম গর্ভাবস্থায় বাতাবি লেবু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের সর্তকতা সম্পর্কে জেনেছি। তাই গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন। কেননা গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ক্রটির কারণে অনেক সময় সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।
আজকের আর্টিকেল পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। কেননা আমাদের ওয়েবসাইটে আমরা নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল পোস্ট করে থাকি। আমাদের আজকের আলোচনা ব্যতিত কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url