অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪

আমরা অনেক সময় অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটে থাকি আগ্রিম। পরে দেখা যায় আমাদের আগের কাটা টিকিটে পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। ওইসব দিনে জন্য আমাদের অনলাইনে টিকিট বাতিল করতে হয়। আপনি যদি অনলাইনে টিকিট বাতিল করার নিয়ম জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনাদের কাজে আসবে। 

photo

আপনি অগ্রিম ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করে রেখেছেন। কারণবশত সেই তারিখে আপনি যাতায়াত বাতিল চাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশে অনলাইন ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ অনুযায়ী জানা নেই। তাহলে চলুন জেনে নেই কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে।

সূচিপত্র 

ভূমিকা 

বর্তমানে নিরাপদ এবং জনপ্রিয় ভ্রমণ হচ্ছে ট্রেন ভ্রমণ। সবচেয়ে কম মূল্যে আমরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজেই যেতে পারি। ট্রেনে যাতায়াত করার পূর্বে প্রথমে আমাদের অনলাইনের মাধ্যমে বা টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। তারপর ট্রেন ভ্রমণ করতে হবে। এই পোস্টে ট্রেন সম্পর্কিত সকল তথ্য যেমন বাংলাদেশ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং ট্রেনের টিকিট বাতিল সকল তথ্য বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

রেলওয়ে টিকিট রিটার্ন পলিসি ইন বাংলাদেশ 

অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম চালু করা হয়েছে। ফলে আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করতে পারবেন। বাংলাদেশে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে -

  • আপনার টিকিট বাতিল করার পূর্বে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম ও নীতিমালা সম্পর্কে ভালোভাবে পড়ে নিন।
  • অনলাইনে টিকিট (online ticket) বাতিল প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র রেল সেবা অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমেে ক্রয় করা টিকিটের জন্য কার্যকর হবে অন্যথায় গ্রহণযোগ্য নয়। 
  • আপনার প্রথমে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে তারপর লগইন করা না থাকলে আপনার অ্যাকাউন্টটি লগইন করে নিন।
  • তারপর Purchase History  থেকে অনলাইন টিকিট রিফান্ড অপশনে ক্লিক করে প্রক্রিয়াটি শুরু করুন। 
  • রিফান্ড বাটনে ক্লিক করা হলে একটি ওটিপি আপনার যাচাই কারণের জন্য আপনার মোবাইল নাম্বারে প্রেরণ করা হবে।
  • ওটিপিটি সাবমিট করার পরে আপনার অনলাইন ট্রেনের টিকিট বাতিল প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে যাবে।
  • মনে রাখতে হবে ওটিপি সাবমিট করার পরেই আপনার বুক করা সিট ছেড়ে দেওয়া হয় যেন অন্যরা সেটি ক্রয় করতে পারেন। 
  • যাত্রা শুরুর তারিখের পূর্বেই যদি আপনি কোন কাউন্টার থেকে আপনার অনলাইন টিকিটটি প্রিন্ট আউট করে নেন তাহলে উক্ত টিকিট বাংলাদেশের রেলওয়ে নিয়ম অনুযায়ী বাতিল বা রিফান্ড করা হবে না। 
ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। টিকিট বাতিল করার জন্য যেসব বিষয় জানতে হবে সকল বিষয় সম্পর্কে আমরা আলোচনা করেছি। আশা করি ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ে আপনাদের আর কোন সমস্যা হবে না। 

অনলাইন টিকেট রিফান্ড 

অনলাইন বা টিকিট কাউন্টারে ক্রয়কৃত অনলাইন ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম অনুযায়ী রিফান্ড করতে পারবেন। বর্তমান বাংলাদেশ রেল কোম্পানি অনলাইন টিকিট ফেরত বা রিফান্ড করার সুবিধা চালু করেছে। অনলাইন টিকিট ফেরত বা রিফান্ড করার প্রক্রিয়াটি চালু হয়েছে ২০২৩ সালের ১ মার্চ থেকে।

আরো পড়ুন : বাংলা বারো মাসের ক্যারেন্ডার ১৪৩১ এবং সরকারি ছুটি ২০২৪

বাংলাদেশ রেলওয়ের এক সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন - অনলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের সকল টিকিট বাতিল বা রিফান্ড করার পদ্ধতি চালু হলে উক্ত টিকিট বাতিল করার জন্য কাউন্টারে আসার প্রয়োজন হবে না। তখন অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম প্রক্রিয়াকরণ সহজ হয়ে উঠবে।

ট্রেনের টিকিট বাতিল করলে কত টাকা কাটে

ট্রেনের টিকিট ক্যান্সেল বা বাতিল করার প্রক্রিয়াটি নির্ভর করবে সম্পূর্ণ আপনার নিজের উপর। বাংলাদেশে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনের টিকিট বাতিল করতে পারবেন। ট্রেনের টিকিট ক্যানন্সেল করতে হলে কয়েকটি ধাপের মাধ্যে দিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেকটি টাকার পরিমান আলাদা আলাদা। 

  • আপনি যদি ট্রেন ছাড়ার ৪৮ ঘন্টা পূর্বে ট্রেনের টিকিট বাতিল রিফান্ড করেন তাহলে এসি ৪০ টাকা, প্রথম শ্রেণী ৩০ এবং অন্যান্য শ্রেণী সিটগুলোর জন্য ২৫ টাকা করে চার্জ কাটা হয়ে থাকে। 
  • ২৪ ঘন্টার কম ১২ ঘন্টার মধ্যে টিকিট ফেরত দিলে ভাড়ার ৫০ ভাগ চার্জ করা হবে।
  • ৬ ঘন্টার বেশি সময়ে টিকিট বাতিল করলে ভাড়ার ৭৫ ভাগ চার্জ টেকে নেওয়া হয়।
  • যাত্রা শুরুর ৬ ঘন্টার কম সময়ে যদি টিকিট ফেরত দেওয়া হয় তাহলে টিকিট মূল্য অ- ফেরতযোগ্য গণ্য করা হয়। 
ট্রেনের টিকিট বাতিল করার সময় কত টাকা কাটবে তা নির্ভর করে আপনি কোন সময় তা বাতিল বা ক্যান্সেল করবেন তা উপর। আমরা অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়া নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আমরা কাউন্টার ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়া নিয়ম সম্পর্কে নিচে আলোচনা করব। 
ট্রেনের -টিকিট

কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়া নিয়ম 

আপনি কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করেছেন। সে টিকিট বাতিল করতে হলে আপনাকে ওই কাউন্টারই যেতে হবে। কাউন্টারে কাটা টিকিট অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়ার নিয়ম এবং ক্যান্সল চার্জ প্রায় একই। কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট ফেরত দেওয়া নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে -

  • প্রথমে আপনি যে স্টেশন থেকে টিকিট সংগ্রহ করেছেন সেই স্টেশনে যেতে হবে। অন্য স্টেশনে গেলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। 
  • যাত্রা শুরুর ৪৮ ঘন্টা পূর্বে টিকিট ফেরত দিতে হবে। ৪৮ ঘন্টার কম সময় হলে তা অ - ফেরতযোগ্য। 
  • টিকিট কাউন্টারে দেওয়ার পর আপনি আপনার টিকিট এবং জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে তাদের টিকিট বাতিল করার কথা জানান।
  • তারপর বাংলাদেশ ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম অনুযায়ী আপনার ট্রেনের টিকিট বাতিল প্রক্রিয়াটি চালু হবে। 
কাউন্টার থেকে কাটা টিকিট ফেরত দেওয়া জন্য আপনাকে কাউন্টারে যেতে হবে। কাউন্টারে কাটা টিকিট আমরা অনলাইনে ফেরত দিতে পারব না। এখন আমরা বাংলাদেশে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। 
photo

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম অনলাইনে সম্পর্কে জানতে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। বর্তমান সময়ে আমরা কম বেশি সবাই ব্যস্ত থাকি। ব্যস্ততার কারণে কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটার সময় নেই। আপনি ঘরে বসেই যে কোন ট্রেনের টিকিট সহজেই কাটতে পারবেন। এর জন্য আপনার প্রয়োজন একটি স্মার্টফোন, অথবা ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ।

প্রথমে আপনাকে রেলওয়ে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে অথবা মোবাইল থেকে রেইল সেবা অ্যাপস ইনস্টল করে নিতে হবে। এরপর এনআইডি কার্ড এর নাম্বার দিয়ে আপনাকে রেজিষ্ট্রেশন করে নিতে হবে। রেজিষ্ট্রেশন হয়ে যাওয়ার পর আপনার সামনে একটি হোমপেজ শো করবে। এরপর উক্ত হোম পেজে যেয়ে আপনি কোন স্টেশন থেকে যাবেন সেই স্টেশনের নাম লিখতে হবে। 

এরপর আপনি কোন স্টেশনে নামবেন সেই স্টেশনের নাম লিখতে হবে। পরবর্তীতে আপনি কোন ধরনের সিট নিতে চান সেটাকে সিলেক্ট করতে হবে। সেটা হতে পারে এসি বা লোকাল সিট। এরপর আপনাকে ট্রেনের নাম সিলেক্ট করতে হবে। অর্থাৎ ওই রুটে একাধিক ট্রেন থাকতে পারে, তাই আপনি যে ট্রেনে যেতে চান সে ট্রেনের নামের উপর ক্লিক করে সিলেক্ট করতে হবে। 

এরপর আপনাকে একটি সিট প্লান দেখানো হবে এর মধ্যে যেগুলোতে আপনি টিকিট কাটতে পারবেন। কারণ অন্যান্য যেগুলো কালার আছে সেগুলো টিকিট কাটা হয়ে গেছে। যেগুলো সিট ফাঁকা থাকে সেগুলো শুধুমাত্র সাদা দেখায়।

সিট সিলেক্ট হয়ে গেলে আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন এজন্য আপনাকে পেমেন্ট মেথড দেখাবে। অর্থাৎ আপনি বিকাশ থেকে পেমেন্ট করবেন বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে থেকে পেমেন্ট করতে পারবেন। ওখানে যেগুলো মাধ্যমে এর নাম দেওয়া থাকবে সবগুলো থেকে আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন। যদি আপনি বিকাশ থেকে পেমেন্ট করতে চান তাহলে বিকাশ লেখার উপর ক্লিক করতে হবে। 


এখানে ক্লিক করার পরে আপনার বিকাশ নাম্বারে একটি ওটিপি যাবে। মেসেজ থেকে ওটিপি নাম্বার নিয়ে যেখানে ওটিপি চায় সেখানে ওটিপি দিয়ে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার বিকাশ ওপেন হয়ে যাবে।ওপেন হওয়ার পর আপনার পিন নাম্বার চাবে। পিন নাম্বার দেওয়া হয়ে গেলে অটোমেটিক আপনার বিকাশ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নিবে।

এরপর আপনার অ্যাপসে একটি মেসেজ আসবে সেখানে লেখা থাকবে আপনার টিকিট কনফার্ম হয়েছে। শো টিকিট নামে একটি অপশন আসবে। সেখান থেকে ক্লিক করে আপনার টিকিট দেখতে পাবেন। 

আর এভাবে আপনি অনলাইনে ঘরে বসে টিকিট কাটতে পারবেন। যেকোনো ট্রেনের যেকোন জায়গা থেকে। তাহলে কিভাবে আপনি ঘরে বসে টিকিট কাটতে পারবেন আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এরপর উক্ত টিকিট প্রিন্ট করে আপনার সঙ্গে রাখতে হবে যাত্রার সময়। 

আমাদের মন্তব্য 

আপনি আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম, কাউন্টারে গিয়ে ট্রেনের টিকিট বাতিল করার নিয়ম, কিভাবে রিফান্ড করতে হবে এবং টিকিট রিফান্ড বা ক্যান্সেল করলে কত টাকা চার্জ নেওয়া হয় তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি আমাদের পোস্টের মাধ্যমে উপকৃত হবেন। আমাদের আলোচনা ছাড়া কোন প্রশ্ন বা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আমরা আমাদের সঠিক উত্তর দেওয়া চেষ্টা করব। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url