বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সম্পন্ন নিয়ম ২০২৪
উক্ত আর্টকেলে আমি আজকে কৃষি ব্যাংক সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। আমি চেষ্টা করব কৃষি ব্যাংক লোন এর যোগ্যতা,কৃষি ব্যাংক লোন পেতে কি কি কাগজ লাগবে, কৃষি ব্যাংকের লোন পদ্ধতি, কৃষি ব্যাংকের লোন পরিশোধের নিয়ম, সুদের হার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ে কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানে নিন।
সূচিপত্র : বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কৃষি নেওয়ার পদ্ধতি
কৃষি ব্যাংকের লোন নেওয়া পদ্ধতি
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার সাথে সাথে কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার যেসব যোগ্যতা আছে সেগুলো জানা জরুরি। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পেতে হলে অবশ্যই কিছু যোগ্যতা থাকা লাগবে যেটা কমবেশি সব ব্যাংকেই থাকে। কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে উল্লেখ করা হলো -
- আপনাকে অবশ্যই একজন কৃষক হতে হবে। যদি কৃষক না হন অন্তত কৃষি কাজের সাথে সরাসরি জড়িত আছেন এমন প্রমাণ দিতে হবে।
- পূর্বে যদি আপনি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে থাকেন এবং তা পরিষদ না করে থাকেন তাহলে আপনি লোন পাওয়ার অযোগ্য বলে গণ্য হবেন।
- আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং আপনার বয়স ২১ বছরের বেশি হতে হবে।
- সঠিকভাবে লোনের টাকা ব্যবহার করার ক্ষমতা থাকতে হবে অর্থাৎ নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় আছে এরকম প্রমাণ দিতে হবে।
- যদি কারো বাড়ি ঘর না থাকে এবং পূর্ব থেকে ঋণের মধ্যেই থাকে তাহলে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক তাকে ঋণ প্রদান করবে না।
এতক্ষণ পর্যন্ত আমারা কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে এবং লোন পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে পারলাম।
কৃষি ব্যাংকের লোনের প্রকারভেদ
কৃষি ব্যাংক অন্যান ব্যাংকের মতো তিন ধরনের ঋণ দিয়ে থাকে। নিম্নে কৃষি ব্যাংকের ঋণের প্রকারভেদ আলোচনা করা হয়েছে -
- স্বল্পমেয়াদি ঋণ
- মধ্যমেয়াদি ঋণ
- দীর্ঘমেয়াদি ঋণ
এই তিন ধরনের ঋণের মধ্যে সেরকম কোন পার্থক্য নেই। তবে ঋণগুলো পরিশোধের সময় এর পার্থক্য আছে। এই তিন ধরনের ঋণ বাদেও কৃষি ব্যাংকের আরো আলাদা ধরনের ঋণ আছে। বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংক শুধুমাত্র শস্য খাতের জন্য তার পাঁচটি কাগজপত্র নিয়ে থাকে।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। ঋণের খাত সময়কাল এবং সুদের হার নিয়ে আলাদাভাবে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেমন-
- শস্য ঋণ পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- শস্য ঋণের জন্য প্রথমে লাগবে আপনার ভোটার আইডি কার্ড
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- আপনার এলাকার চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট
- শুধু শস্য খাটের জন্য কোন প্রকার দলিল প্রয়োজন হয় না।
কৃষি লোন পরিশোধের নিয়ম
উপরে উল্লেখিত আলোচনায় আপনারা জানতে পেরেছেন কৃষি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় এখন আমারা এই কৃষি ব্যাংকে লোন পরিশোধের নিয়ম সম্পর্কে জানব।শস্য খাতের জন্য জমি বাবদ উৎপাদনের পরিপ্রেক্ষিতে যে ঋণ গ্রহণ করা হলো সেই জমির উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে সময় মতো সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় সুদসহ পরিশোধ না করলে পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি অ্যাক্ট ১৯১৩ এর আওতায় সার্টফিকেট কেসের মাধ্যমে ব্যাংক আপনার নিকট হতে পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা করবে।
সাধারণত ফসল উৎপাদন তিন থেকে চার মাস সময় লাগে।হয়তো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন আপনাকে লোন গ্রহণের তারিখ হইতে লোন পরিশোধের জন্য ৬ মাস সময় দিবে।
কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার শর্তাবলী
স্বল্প মেয়াদি ঋণ,যা কিনা শস্য উৎপাদন, কৃষিজাত পণ্য, মৎস্য চাষ,গরু মোটাতাজাকরণ,বিপণন এবং অন্যান্য উৎপাদনমুখী কার্যকলাপের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। এই ঋণ গ্রহণ করলে সর্বোচ্চ ১৮ মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। মোট বার্ষিক ঋণের ক্ষেতে সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ শস্য নির্ধারণ করতে হবে।
মধ্যম মেয়াদি যেসকল ঋণগুলো রয়েছে যেমন-ফল ও ফুলের চাষ,মৎস চাষ,পশু সম্পদ,সেবা ও কৃষি যন্ত্রপাতি, গ্রামীণ পরিবহন ইত্যাদির জন্য ঋণ পরিশোধ সময়সীমা ১৮ মাস থেকে শুরু করে ৫ বছর পর্যন্ত।
তাছাড়া দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের জন্য ঋণ পরিশোধের সময়সীমা সর্বনিম্ন ৫ বছর থেকে শুরু করে প্রকল্প ভেদে সময়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়। দীর্ঘমেয়াদী ঋণগুলো দেয়া হয় মূলত কৃষি শিল্পের ক্ষেত্রে, কৃষিজাত খামার, রপ্তানিযোগ্য পণ্য উৎপাদন, চা বাগান, রাবার চাষ ইত্যাদি কাজের জন্য।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সুদের হার
অন্যান্য ব্যাংকের মত কৃষি ব্যাংকের লোন এর নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ রয়েছে। কৃষি ব্যাংকের সুদের হার ৯% কিন্তু সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী সুদের হার ১% কমিয়ে বর্তমানে ৮% সুদের হার ধার্য করা হয়েছে। যা অন্যান ব্যাংকের তুলনায় অনেকটা কম।
কৃষি ব্যাংক লোন এর সুযোগ সুবিধা
অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে দেশে এতোগুলা ব্যাংক থাকতে কেনো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের লোন গ্রহণ করব।এবার তাহলে জেনে নিন কিছু বিশেষ সুবিধা যার কারণে কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ভালো। যেমন-
- কৃষি ব্যাংকে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে।
- অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সুদের হার কিছুটা কম।
- কৃষকদের জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করে থাকে।
- মাছ চাষ ও শস্য চাষের মত কাজের জন্য ঋণ দেয়া হয়ে থাকে।
- ঋণের পাশাপাশি থাকছে DPS সুবিধা।
কৃষি ব্যাংকের লোনের অ্যাপ
কৃষি ব্যাংক কতৃক পরিচালিত মোবাইল অ্যাপ BKB-Janala এর মাধ্যমে লোনের যাবতীয় সকল তথ্য জানতে পারবেন পাশাপাশি আবেদন ফরম ও সেখানে পেয়ে যাবেন ( ঋণের ধরণ,প্রয়োজনীয় নথি,ঋণ আবেদন ফর্ম, submition সিস্টেম এবং বিধি, ক্রেডিট নিয়ম,সুদ, আমানত সম্পর্কিত তথ্য হার যোগ্যতা ইত্যাদি)
আমাদের মন্তব্য
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মূলত দরিদ্র, কৃষক শ্রেণির মানুষের আস্থার ব্যাংক।এখান থেকে স্বল্প মেয়াদি ঋণ গ্রহণ করে কৃষিকাজ সচল রেখে দেশের অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ আবদান।একই সাথে কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম জানানোর মাধ্যমে একই কাজে সাহায্য করার আমাদের এই চেষ্টা। আশা করি আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে কৃষি ব্যাংক লোন সম্পর্কে সকল তথ্য জানাতে পেরেছি।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url