লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া ৭ টি উপায়
লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকে জানতে চান। তাদের জন্য আমাদের আজকের এই পোস্ট। লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়া অনেক সহজ এবং কার্যকারি একটি পদ্ধতি। আপনার ঘরে বসে লেবু ব্যবহার করে ফর্সা হতে পারেন।
লেবুর বিভিন্ন গুণাগুণ
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লেবুর ব্যবহার
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য লেবু: ত্বক অনেক সময় কালচে ও মলিন দেখায়।ব্রণ হওয়ার প্রবণতাও থাকে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের জন্য এই প্যাক।ঘরোয়া টোটকার মধ্যে খুবই জনপ্রিয় হল মধু আর লেবু।ট্যান তোলা থেকে ফরসা হওয়া, ইন্টারনেটে সার্চ করলে প্রথমেই যে টোটকা আপনি পাবেন তা হল মধুর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে তা ত্বক লাগানো।
চিনি ও লেবুর রস: লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লচ হিসাবে কাজ করে।মুখের লোম দূর করা ও লোমের ঘনত্ব কমাতে লেবুর রসের জুড়ি নেই। চিনি দিয়ে মাসাজ করলে ত্বকের রোমকূপ থেকে লোম দূর হতে সহায়তা করে।
৩টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ পানি। প্রথমে সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। মুখ ধোয়ার সময় ভালোভাবে ঘষে তুলুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ব্যবহার করুন।
লেবু ও মুলতানিমাটি:গ্রেডারের সাহায্য লেবুর খোসার অংশটা কুচি করে নিতে পারেন। কুচি করা খোসা বেটে নিন।১ টেবিল চামচ লেবুর পেস্ট, ৩-৪ টি পুদিনাপাতা, ৬-৭ টি তুরসীপাতা ও ২ চা চামচ মুলতানি মাটি পেস্ট করুন। পুরোটা মুখে মেখে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহারকরলে ত্বক উজ্জ্বলতা আসবে।
লেবু ও মধু:স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ১ চা-চামচ লেবুর রস,১টি ডিমের কুসুম,১ চা-চামচ মধু,৬-৭ ফোঁটা জলপাই তেল ও ২ চা- চামচ গমের ময়দা মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করুন।এই প্যাক ত্বক উজ্জ্বল করে এবং বলিরেখা দূর করে।
লেবু ও দুধ:একটি লেবুর অর্ধেক অংশ কেটে তার রস বের করে নিন। এবার তার সাথে ১০ টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে নিন।এবার মিশ্রণটি মুখে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
লেবুর রস ও চালের গুড়া:হাত ও পায়ের রুক্ষতা দূর করতে লেবুর রসের সঙ্গে একই পরিমাণ চালের গুড়া মিশিয়ে ভালভাবে হাত পায়ে লাগিয়ে নিন। এতে ত্বক আগের চেয়ে অনেক বেশি কোমল হবে।
ত্বক ফর্সা করতে লেবু ও মধু
লেবু ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন ত্বকের উন্নতির জন্য। লেবুর রস ত্বকের ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে এবং মধু ত্বকের ময়েশ্চারাইজার অর্থাৎ মোলায়েম করে।
আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক হয় তবে তার জন্য এক চামচ মধুতে দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করুন। আপনার যদি স্বাভাবিক বা শুষ্ক ত্বক হয় তবে আপনি সমপরিমাণ মধু ও লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
সমপরিমাণ লেবু এবং শসার রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন ২০ মিনিট। এরপর সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্রতিকারটি তৈলাক্ত ত্বকের লোকদের জন্য কার্যকারী কারণ লেবু এবং শসার রস ত্বকের অতিরিক্ত ছিদ্র বন্ধ করে এবং ত্বকের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
প্রাকৃতিকবভাবে ফর্সা হওয়ার উপায়
লেবুর ব্লিচিং এজেন্ট ত্বক ফর্সা করে, তাই ফর্সা রং পেতে লেবু ব্যবহার করা হয়। নিম্ন উল্লেখিত উপায় বা পদ্ধতিতে আপনি নেমে চললে আপনি নিশ্চিত একটি সুন্দর ত্বকের অধিকারী হবেন।
বর্ষা ও গ্রীষ্মের ঋতুতে জল ও ঘামের কারণে আমাদের ত্বক নিস্তেজ হতে শুরু করে, যা সরাসরি আমাদের গায়ের রঙের ওপর প্রভাব ফেলে। আপনারও যদি একই সমস্যা থাকে, তাহলে ত্বক ফর্সা করতে লেবু ব্যবহার করতে পারবেন। লেবুর সাহায্যে আপনি সহজেই ঘরে বসেই আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করতে পারবেন। মুখে লেবু মাসাজ করলে মৃত কোষ দূর হবে, ত্বক উজ্জ্বল হবে।
মুখে লেবু ব্যবহারের উপকারীতা:
লেবুর কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ত্বকের যত্নে একটি চমৎকার উপাদান তা হল :
কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় : লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ যা অকাল বার্ধক্য রোধ করতে এবং ত্বকের উন্নতি করতে সাহায্য করে৷ এটি কোলজেন উৎপাদনকেও বাড়িয়ে তোলে যা ত্বককে তরুণ দেখায়।
অ্যান্টিফাঙ্গাল: লেবুর রসে অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ক্যান্ডিডা ছত্রাকের ফুসকুড়ির মতো ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসা করতে সহায়তা করে।
ত্বক উজ্জ্বল করার এজেন্ট : লেবুর রস অ্যাসিড সমৃদ্ধ, প্রাথমিকভাবে সাইট্টিক অ্যাসিড, কম পরিমাণ ম্যালিক অ্যাসিড এবং অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, যা সাধারণ ভিটামিন সি নামে পরিচিত। লেবুতে প্রচুর এসিড থাকার কারণে এটিতে চমৎকার ত্বক উজ্জ্বল করার বৈশিষ্ট রয়েছে। এছাড়া এটি বয়সের দাগ এবং কালো দাগ কমাতে কার্যকর।
লেবু দিয়ে ব্রাণ দূর করার উপায়
লেবু হলো এক ধরনের সাইট্রাস ফল যা স্বাদে ও বহুমুখীতার জন্য পরিচিত।লেবু ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেয়। উচ্চ মাএায় ভিটামিন সি কন্টেন্ট কোলেজেন বাড়ায়। লেবুতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যাসিড মৃদু এক্রফোলয়টিং উপাদান থাকার কারণে এটি সম্ভাব্য ব্রণ দূর করে। লেবুর রস ত্বকে ব্যবহার করতে হলে সামান্য লেবুর রসের সাথে জল মিশিয়ে একটি পাতলা দ্রবণ তৈরি করতে হবে।তুলো দিয়ে সে দ্রবণে ভিজিয়ে ত্বকে ব্রণ যেখানে সেই জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে। কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন এরপর ধয়ে ফেলুন।
আবার লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের লাবণ্য বাড়িয়ে দেয়। ফলে ত্বক সুন্দর দেখানোর জন্য বাড়তি প্রসাধনীর ব্যবহার না করলেও চলে।প্রাকৃতিকভাবে ত্বক সুন্দর রাখার জন্য লেবুর চেয়ে বেশি উপকারী আর কিছু না।লেবু অ্যান্টি ফাঙ্গাস হিসেবে কাজ করে। লেবুতে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান দাগ দূর করে।সেই সঙ্গে ত্বকের থেকে দাগ তুলে দিতেও সাহায্য করে লেবুর রস।তবে লেবু রসমিশ্রিত প্যাক ত্বকের ব্যাবহারের পর কারও কারও ত্বক জ্বালাপোড়া হতে দেখা যায়।তাই এ ধরনের প্যাক ব্যবহার করতে চাইলেও কিছু বিষয়ে সতর্কতা আবশ্যক।
লেবু পানির উপকারীতা
অতিসংবেদনশীল ত্বকে লেবুর রস ব্যবহার করলে চুলকানি হতে পারে।অন্যান্য সমস্যা ও দেখা যায়।তাই এই ত্বকে লেবুর রস ব্যবহার না করে ভিন্নভাবে করা যায়। লেবুর খোসার ভেতরের সাদা অংশ পেস্ট করুন। ১ টি লেবু থেকে কমবেশি ঙ চা-চামচ পরিমাণ পেস্ট পাওয়া যায়। ১ চা-চামচ পরিমাণের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মুগডালের বেসন,কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন ও ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।
বডি স্কাব, ফেস প্যাক হিসাবে লেবুর রস
২টি লেবুর খোসা, আধা কাপ লেবুর রস (২ টি লেবু থেকেই মোটামুটিভাবে এই পরিমাণ রস পাওয়া যায়),৬ টেবিল চামচ সুজি,৬ টেবিল চামচ হলুদের রস,২ টি ডিমের সাদা অংশ, ২ টেবিল চামচ হলুদের রস, ২ টি ডিমের সাদা অংশ, ২ টেবিল চামচ জলপাই তেল ও ৩ টেবিল চামচ বাদাম চিনির মিশ্রণ শরীরের ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন সপ্তাহে ১ দিন। ১০-১৫ মিনিট পর তোয়ালা দিয়ে ঘষে ঘষে তুলে ফেলুন। ত্বকের মৃত কোষ সরে যাবে,ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে,ত্বকের বিভিন্ন স্হানের রঙের অসামতা দূর হবে।
আমাদের মন্তব্য :
লেবু ব্যবহার ত্বকে উজ্জ্বল করে পাশাপাশি পরিষ্কার করে। আজকের এই পোস্টে আমরা লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়া উপায়সমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমাদের আলোচনা ছাড়া কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url